ঘুমের মধ্যে লাল ঝরার ৮টি সহজ সমাধান শি’খে নিন

আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই লালা ঝরার ঘ’টনা ঘ’টেছে। মুখে অতিরি’ক্ত লালা উৎপাদন হলে ঘুমের মধ্যে অনেকের লালা ঝরতে দেখা যায়। লালা একটি স্বচ্ছ তরল যা লালা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় এবং পরিপাকে গু’রুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রাখে। লালা খাদ্যকে সিক্ত হতে, পিণ্ডের মত হতে এবং এর এনজাইমের দ্বারা খাবারকে ভাংতে সাহায্য করে।

প্রিয় কোন খাবার বা টক খাবারের কথা মনে আ’সলেই মুখে লালা চলে আসে, তাই না? কিন্তু অনেক বেশি লালার নিঃসরণ আমাদের শ’রীরের আভ্যন্তরীণ কোন কারণকেই নির্দে’শ করে। চলুন তাহলে জে’নে নিই চিকি’ৎসকদের মতে, মুখের অতিরি’ক্ত লালা নিঃসরণের কারণগুলোর বিষয়ে।

কেন লালা ঝরে?আ’সলে মুখের অতিরি’ক্ত লালা ঘুমের সময় বেরিয়ে আসে। এটি অস্বা’ভাবিক নয়। অবশ্য বড়দের এমনটা ঘটলে তা অস্ব’স্তি কর হয়ে ওঠে। ঘুমানোর সময় খাবার বা পানীয় গেলার পেশিগুলো দে’হের অন্যান্য পেশির মতোই নি’ষ্ক্রিয় থাকে। এ কারণে মুখের এই কোণা সেই কোণা থেকে লালা বেরিয়ে আসতে পারে।

কারণ, তখন পেশি এদের ধ’রে রাখা বা নি’য়ন্ত্রণে সক্রিয় থাকে না।এটা অনেক সময়ই স্বা’ভাবিক ঘ’টনা হলেও মাঝে মাঝে অসুখের লক্ষণও প্র’কাশ করে। নিউরোলজি, ঘুম স’মস্যা কিংবা অন্যান্য স্বা’স্থ্যগত স’মস্যার কারণে এমনটা ঘ’টে। স্ট্রোক, সেরেব্রাল পালসি কিংবা মাল্টিপল স্কেলেরোসিস (এমএস)-এ আক্রা’ন্ত হলে ঘুমের মধ্যে মুখ থেকে লালা ঝরতে পারে। আরো কিছু কারণ আছে এমনটা ঘটার।সমাধান কি–

১. সাইনাস পরি’ষ্কার করুনসর্দি বা সংক্র’মণ ের কারণে নাসারন্ধ্র ব’ন্ধ থাকলে ঘুমের সময় লালা ঝরার সম্ভাবনা দেখা দেয়। নাকের পথে নিয়মিত স’মস্যা থাকলে এ ঝামেলায় পড়বেন। যাদের নাসারন্ধ্র জ’ন্মগত কারণেই স্বা’ভাবিকের চেয়ে সরু, তাদের লালা ঝরার স’মস্যা প্রতিনিয়ত থাকে। আর ঘুমের সময় সু’স্থ মানুষও যদি মুখ খু’লে শ্বা’স নেন, তবে একই অব’স্থায় পড়বেন।

প্রতিদিন স্যালাইন দ্রবণ নিয়ে নেটি পট বা অন্য কিছু দিয়ে নাক ধোয়ার জন্য ব্যাবহার করুন। এতে সাইনাস সিক্ত থাকবে এবং দ্বিগুণ হয়ে ঠাণ্ডা বা অ্যালার্জির বি’রুদ্ধে যু’দ্ধ ক’রতে পারবে।এর জন্য দুই গ্লাস পানিতে ১ টেবিল চামুচ লবণ মিশিয়ে গরম করুন।যখন পানি মোটামুটি ঠাণ্ডা হয়ে আসবে তখন একটি সরু মুখের পাত্রে মি’শ্রণটি নিন।এবার পাত্রের সরু মুখটি দিয়ে নাকের এক ছিদ্র দিয়ে পানি ঢুকান যাতে নাকের অপর ছিদ্র দিয়ে পানি বের হয়ে যেতে পারে।সা’বধানে ক’রতে হবে যাতে গলার ভি’তরে পানি চলে না যায়।

২. ঘুমের ভঙ্গি পরিবর্তন করুনএটাকে সবচেয়ে সাধারণ কারণ বলা যায়। ঘুমের ভঙ্গিমা’র কারণে মুখের লালা অতি সহজে বেরিয়ে আসার সুযোগ পায়। চিত হয়ে সোজা ভঙ্গীতে ঘুমালে এমন হওয়ার কথা না। আবার কাত হয়ে ঘুমালে কিংবা উপুড় হয়ে ঘুমালে লালা ঝরার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ অব’স্থায় সাধারণত মুখ নিয়ে নিঃশ্বা’স নিতে হয়। তখন মুখ হা হয়ে থাকে। কাজেই লালা বেরিয়ে আসা অনেক সহজ।

৩. আপনার স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে কিনা দেখু’নএ রো’গ থাকলে ঘুমের সময় দে’হ শ্বা’স-প্রশ্বা’স ব’ন্ধ করে দেয়। বাধ্য হয়ে মুখ দিয়ে জো’রপূর্বক শ্বা’স গ্রহণ ক’রতে হয়। তাই এমন ঘ’টনায় স্লিপ অ্যাপনিয়া নেপথ্যে থাকতেই পারে। আর স্লিপ অ্যাপনিয়া এক ভ’য়াবহ রো’গ হয়ে দেখা দেয়।

৪. অতিরি’ক্ত ওজন কমানঅতিরি’ক্ত ওজন আপনার ঘুমের উপর বাজে প্র’ভাব ফে’লে । এর মধ্যে মুখ দিয়ে লালা ঝরা অন্যতম।

৫. বিশেষ ডিভাইস ব্যবহার করুনঅনেকে ম্যানডিবুলার ডিভাইস ব্যবহার করেন। এটা এমন এক যন্ত্র যা মুখে লা’গিয়ে ঘুমাতে হয়। এটা ঘুমের সময় মুখ ব’ন্ধ রাখে এবং ঘুমকে আরামদায়ক করে। স’মস্যাটা স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণে ঘটলে সিপিএপি মেশিন বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। এই যন্ত্র কেবল লালা ঝরানোই ব’ন্ধ করবে না, ঘুমকে গ’ভীরে নিয়ে যাবে। আপনি সঠিক পদ্ধতিতে এবং সুষ্ঠুভাবে ঘুমাচ্ছেন- তা নি’শ্চিত করবে সিপিএপি মেশিন।

৬. ওষুধের পার্শ্বপ্র’তিক্রিয়াবিশেষ কোনো রো’গের চিকিৎ’সা নিতে থাকলে ওষুধের পার্শ্বপ্র’তিক্রিয়া হিসেবে এ স’মস্যা দেখা দিতে পারে। অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ (বিশেষ করে ক্লোজাপাইন) এবং আলঝেইমা’র্স রো’গে ব্যবহৃত ওষুধের প্র’ভাবে লালা ঝরে।

৭. উঁচু বালিশে ঘুমানউঁচু বালিশে ঘুমালে আপনার মাথা উঁচু হয়ে থাকবে যা লালা ঝরা প্র’তিরো’ধ করবে। তবে এতটা উঁচু করবেন না যেন ঘুমের অসুবিধা হয়। আরামদায়ক অব’স্থান তৈরি করুন।

৮. সার্জা’রির কথা ভাবুনসত্যিকার অর্থে বিশেষজ্ঞই ভালো বুঝবেন রো’গীকে কি ধ’রনের চিকিৎ’সা দেওয়া প্রয়োজন। তবে প্রাথমিকভাবে ঘুমের ভঙ্গিমা বদলাতে বলা হয়।অনেকেই আরো সাহসী চিকিৎ’সা নিতে চান। সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ সঠিক মাত্রার বোটোক্স ইঞ্জেকশন দিয়ে থাকেন। আর স’মস্যা গু’রুতর হলে শেষ পর্যন্ত সার্জা’রির পথ তো খোলা আছেই।