
ভিডিও লিংক নিচে দেয়া আছেঃ
প্রধান অর্থকরী ফসল হিসাবে নারিকেল অনেক সুপরিচিত।নারিকেল কাছের প্রায় সব কিছু মানব জীবনে দরকার হয়ে থাকে। আমাদের দেশে বর্তমানে নারিকেলের যেসব জাতের প্রচলন আছে সেগুলো মূলত লম্বা জাতের,ফলন তুলনামুলকভাবে কম,ফল প্রাপ্তির সংখা বছরে ৫০-৬০ টি ফল দেয় এবং ফলন পেতে স্বাভাবিকভাবে ৭ থেকে ৮ বছর সময় লাগে।
তাই নারিকেলের ফলন যাতে তাড়াতাড়ি পাওয়া যায় তাই নতুন এ ‘ডিজে সম্পূর্ণ ডোয়ার্ফ (খাটো) ’ জাতের নারিকেল আবাদের ব্যাপারে জোর দেওয়া হচ্ছে। তিন বছরের মাথায় নারিকেলের গাছের উচ্চতা হবে দুই থেকে আড়াই ফুট।
নতুন জাতের এ নারিকেল গাছ থেকে যথাযথ পরিচর্যা করলে ২.৫ থেকে ৩ বছরের মধ্যে ফুল আসা শুরু হবে। বছরে তিন থেকে চারবার গাছে ফুল আসবে। ফলনের পরিমাণ আমাদের দেশীয় জাতের থেকে প্রায় তিনগুণ। উপযুক্ত পরিচর্যা করলে প্রতি বছর প্রায় ২০০-২৫০ টি নারিকেল পাওয়া যাবে। একটি গাছ বাঁচবে ২০ থেকে ২৫ বছর।
খাটো জাতের ভিয়েতনামের ডাবে পানির পরিমাণ তুলনামূলক বেশি থাকে। সাধারণত সব ধরনের মাটিতে খাটো জাতের নারিকেল গাছ লাগানো যায়। তা ছাড়া এ জাতের গাছ লবণাক্ততা অনেক বেশি সহ্য করতে পারে। গাছ খাটো হওয়ায় পরিচর্যাও সহজ।
ইতোমধ্যে বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এ খাটো জাতের নারিকেলগাছ লাগানো শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বান্দরবান, রাঙামাটি জেলার পাহাড়ি এলাকায়ও এ জাতের গাছ লাগানো হয়েছে।
উৎপাদন পদ্ধতিঃ
মাটি : নিকাশযুক্ত দো-আঁশ থেকে বেলে দো-আঁশ মাটি। তবে সব ধরনের মাটি নারিকেল চাষের জন্য উপযোগী। অতি শক্ত , কাঁকর শীলাময় মাটি হলে প্রায় ১.৫ মিটার চওড়া ও ১.৫ মিটার গভীরকরে গর্ত করে জৈব সার দিয়ে ভরাট করে গাছ লাগালে গাছ ভালোভাবে বেড়ে উঠবে।
রোপণের সময় : জুন-সেপ্টেম্বর।
রোপণের দূরত্ব : ৬ x ৬ মিটার হিসেবে হেক্টরপ্রতি ২৭৮ টি চারা প্রয়োজন। বাগান আকারে ৭ মিটার দূরত্বে চারা রোপণ করা যাবে।
গর্ত তৈরি ও সার প্রয়োগ : ১মি x ১ মি x ১ মি মাপের গর্ত তৈরি করা প্রয়োজন। গর্ত তৈরি করে ৪-৫ দিন রোদে রাখার পর প্রতি গর্তে পচা গোবর অথবা আবর্জনা পচা সার ৪০-৫০ কেজি, কেঁচো সার ২ কেজি, হাড়ের গুড়া অথবা শুঁটকি মাছের গুড়া ১ কেজি, নিমের খৈল ৫০০ গ্রাম, টিএসপি ৩০০ গ্রাম, এমওপি ৩৫০ গ্রাম, জিঙ্ক সালফেট ১০০ গ্রাম, বোরন বা বোরিক এসিড, ২০০, ফুরাডান বা কার্বোফুরান ৫০ গ্রাম এবং কার্বেন্ডাজিম দলীয় ছত্রাকনাশক ১০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে। মাটিতে অবস্থানরত পোকার আক্রমণ থেকে চারা রক্ষার জন্য প্রতি গর্তে ৫০ গ্রাম ফুরাডান প্রয়োগ করতে হয়।
সব কিছু মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার পরে ১২-১৫ দিনের মধ্যে গাছ লাগিয়ে গর্ত ভরাট করে দিতে হবে। ভরাটের পর পানি দিয়ে গর্তটাকে ভিজিয়ে দিতে হবে যাতে সব সার ও অন্যান্য উপাদান মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশে যায়। গর্তের তলায় বা নিচের স্তরে ১০-১৫ সেমি চওড়া করে নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে ভরাট করা হলে তা বাতাস চলাচল ও শিকড় ছড়ানোর জন্য সহায়ক হবে।
আর চারা বপণের দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যেই ফলবে। চাষিকে ৬-৭ বছর অপেক্ষা করতে হয় না। নতুন উদ্ভাবিত এ গাছ বছরে ২৫০ থেকে ৩৫০টি নারিকেল দিয়ে থাকে। পরিমাণটি দেশি গাছের তুলনায় তিন থেকে পাঁচ গুণ বেশি। আরো বিস্তারিত জানতে নিচের দেয়া লিংকে ক্লিক করুন।
ভিডিওর লিংকঃ https://youtu.be/F5OWKcyw_3I